মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন
মো:জিহান ইসলাম রাজিবঃ বরিশালের বাবুগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের আপত্তিকর মন্তব্য সহ্য করতে না পেরে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। রোববার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে শনিবার দুপুরে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। তবে ছাত্রী ও তার পরিবারের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জামিল।
আত্মহননের চেষ্টাকারী ছাত্রী মরিয়ম আক্তার বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর রহমতপুরের বাসিন্দা ও কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট এর মজুরী ভিত্তিক কর্মচারী দেলোয়ার হোসেন এর মেয়ে।
ছাত্রী ও তার বাবা জানান, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খন্ডকালিন শিক্ষক ফারজানা আক্তার মিতু’র সম্প্রতি বিয়ে হয়। এজন্য তিনি স্কুলে আসলেও নিয়মিত ক্লাস না নিয়ে মোবাইল ফোনে কথপোকথনে ব্যস্ত থাকেন। তাই নববিবাহিত শিক্ষিকার দাম্পত্ত নিয়ে একই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম ও ৯ম শ্রেণির অপর এক ছাত্রী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে।
তা যে কোন মাধ্যমে জানতে পেরে দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন শিক্ষক ফারজানা আক্তার মিতু। পরে প্রধান শিক্ষক জামিল তালুকদার শনিবার ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে দরজা বন্ধ করে তিনি ছাত্রী নিয়ে নানা ধরনের অপ্রাসঙ্গিক এবং আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ছাত্রী ও তার পরিবারের।
প্রধান শিক্ষক কর্তৃক অপমান ও লাঞ্চনা সহ্য করতে পারেনি ১০ম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম। এজন্য স্কুল ছুটির পড়ে বাসায় ফেরার পথে ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে নেয় সে। বাসায় ফিরে পরিবারের অজান্তে ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অসুস্থ অবস্থায় গতকাল রোববার স্কুলে যায় মরিয়ম। এর পর স্কুলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
তাৎক্ষনিকভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে রহমতপুর বাজারে খান ফার্মেসীতে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা বেগতিক দেখে সকাল ১১টার দিকে শেবাচিম হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তির পরেই ছাত্রী’র আত্মহত্যার কারন সম্পর্কে জানতে পারেন তার পরিবার।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জামিল এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই ছাত্রী যে অন্যায় করেছে সে জন্য তাকে কোন শাস্তি ও কিছুই বলা হয়নি। তাকে ডেকে এনে শুধুমাত্র তার অভিভাকদের স্কুলে নিয়ে আসতে বলেছি। এতেই ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করলে সেখানে আমাদের কি বলার আছে। এখন যে পরিস্থিতি দেখছি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কিছু বলতেই পারবে না’ বলে মন্তব্য করেন এই শিক্ষক।
উল্লেক্ষ, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিল’র বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে। মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে স্থানীয় মহিলারা ঝাড়– মিছিলও করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।